ভাবুন তো, আপনার শৈশবে আপনি সবচেয়ে বেশি আকৃষ্ট হতেন কিসে? আপনার স্মৃতিতে হয়তো ভেসে আসছে সবুজ মাঠে বন্ধুদের সঙ্গে ছুটে বেড়ানোর কোনো দৃশ্য। কিংবা হয়তো মনে পড়ে গেছে শিশিরভেজা ভোরে শিউলি কুড়ানোর মায়াময় কোনো মুহূর্তের কথা। অথবা হয়তো আপনি ইট দিয়ে বানানো স্টাম্পে বল লাগামাত্র উল্লাসে লাফিয়ে ওঠার বিকেলগুলোর কথা মনে করছেন। দুঃখের ব্যাপার হলো, আধুনিক শহুরে জীবনধারায় শিশুর জন্য এমন উচ্ছ্বাসের মুহূর্ত আসে না বললেই চলে। এ যুগে বহু শিশুর দিন কেটে যায় ডিজিটাল ডিভাইসের পর্দাতেই।
এ আসক্তি থেকে মুক্তির জন্য অবশ্যই চাই আকর্ষণীয় বিনোদনের আয়োজন। বকাবকি করে লাভ তো নেই-ই, উল্টো তাতে মন খারাপ হবে বাড়ির ছোট্ট সদস্যটির। এমন কিছু করার সুযোগ দিতে হবে তাকে, যাতে সে সত্যিই আগ্রহ পায়। তবে সবাই যে একই বিষয়ে আগ্রহী হবে, তা অবশ্য নয়। যার যেমন পছন্দ, তাকে তেমন কাজের সুযোগ করে দিন। কিছু কাজে বাড়িঘর একটু নোংরা হবে, এলোমেলো হবে। তবে সে তো সন্তান পালনেরই একটা অংশ। মেনে নিন এটুকু ঝক্কি। নিজেরাও নিতান্ত প্রয়োজন ছাড়া ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার করবেন না শিশুর সামনে। মনে রাখবেন, সে আপনাদের দেখেই শেখে।
রং নিয়ে যা খুশি

রঙের জগতের সঙ্গে শিশুর পরিচয় করিয়ে দিন
ছবি: পেক্সেলস
রঙের জগতের সঙ্গে শিশুর পরিচয় করিয়ে দিন। ইজেল কিনে দিতে পারেন। তার আঁকা কিছু ছবি বাঁধিয়ে রাখতে পারেন অন্দরে। রং দিয়ে যে কেবল গৎবাঁধা কিছু ছবিই আঁকতে হবে, তা নয়। আঙুলে রং মেখে কাগজে ছাপ দিতে পারে শিশু। তার রাঙা আঙুল দিয়েই চলতে পারে আঁকিবুঁকি। একটি রঙের সঙ্গে আরেকটি রং মিশিয়ে যে নতুন একটি রং হয়, শিশু তা–ও শিখতে পারবে রং নিয়ে খেলতে খেলতে। এ খেলায় সে পাবে আবিষ্কারের আনন্দ। জলরং দিয়ে এ মজার কাজগুলো সে করতে পারবে সহজেই। শিশুকে ইচ্ছামতো আঁকিবুঁকি করার জন্য ঘর কিংবা বারান্দার একটা দেয়ালও দিয়ে দিতে পারেন। আবার মেঝেতে আলপনাও আঁকতে পারেন শিশুকে সঙ্গে নিয়ে।
কাগজ বা পুরোনো কার্টন দিয়ে খেলা

পুরোনো কার্টন দিয়ে খেলতে পারে শিশুছবি: পেক্সেলস
কাগজ ভাঁজ করে কিংবা কেটে অনেক কিছু বানাতে পারে শিশু। ফুল, লতাপাতা, পাখি, গাছ, জাহাজ, মেঘ, সূর্য, চাঁদ, তারা, উড়োজাহাজ—যা খুশি গড়ুক সে। রঙিন কাগজ, পুরু কাগজ—যেমনটা প্রয়োজন, এনে দিন তাকে। পুরোনো কার্টনও কাজে লাগাতে পারেন। তার গড়া জিনিস দিয়ে তার ঘর সাজিয়ে দিতে পারেন। এ রকম কিছু সে বন্ধুদের উপহারও দিতে পারে।